বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে জনগণের জীবনযাত্রার মানও বাড়ছে। কিন্তু বৃদ্ধাবস্থায় আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখনও অনেকের জন্য চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবোতে সরকার ২০১৯ সালে চালু করেছে “সর্বজনীন পেনশন স্কিম”। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সকল নাগরিককে বৃদ্ধাবস্থায় নিয়মিত আয়ের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।

স্কিমের বিশেষত্ব:

  • সকল নাগরিকের জন্য: সরকারি, বেসরকারি, স্ব-কর্মী সহ সকল নাগরিক এই স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
  • নমনীয় অবদান: অবদানের পরিমাণ ব্যক্তির সামর্থ্যের উপর নির্ভর করে। কম আয়ের ব্যক্তিদের জন্য সরকারি সহায়তাও রয়েছে।
  • নিশ্চিত লাভ: অবদানের উপর লাভের হার নির্ধারিত এবং সরকারিভাবে নিশ্চিত করা আছে।
  • অবসর হওয়ার পর আজীবন আয়: ৬০ বছর বয়সে পৌঁছানোর পর অবদানকারীরা প্রতি মাসে পেনশন লাভ করবেন।

স্কিমের সুফল:

  • বৃদ্ধাবস্থায় আর্থিক নিরাপত্তা: এই স্কিমের মাধ্যমে বৃদ্ধাবস্থায় অর্থনৈতিক চাপ কমে যাবে।
  • জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন: নিয়মিত আয়ের ফলে বয়স্কদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।
  • সামাজিক সুরক্ষা: সরকারি এই পদক্ষেপ সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে।
  • জাতীয় সঞ্চয় বৃদ্ধি: সকল নাগরিকের অবদানের ফলে জাতীয় সঞ্চয় বৃদ্ধি পাবে।

স্কিমের চ্যালেঞ্জ:

  • সচেতনতা বৃদ্ধি: অনেক নাগরিক এখনও এই স্কিম সম্পর্কে সচেতন নন। সরকারকে এ বিষয়ে প্রচারণা বাড়াতে হবে।
  • অবদান নিশ্চিত করা: নিয়মিত অবদান না করলে সুফল পাওয়া যাবে না। এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
  • স্কিমের দীর্ঘস্থায়িত্ব: সরকারকে দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

 

বাংলাদেশের চলমান অগ্রযাত্রার পথে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি জনগণের জীবনযাত্রার মানও উন্নত হচ্ছে। তবে বৃদ্ধাবস্থায় আর্থিক নিরাপত্তাহীনতা এখনও অনেকের জন্যই বড় চিন্তা। এই চিন্তা দূর করে প্রত্যেক নাগরিকের মুখে হাসি ফোটাতে এগিয়ে এসেছে সরকারের “সর্বজনীন পেনশন স্কিম”। এই প্রকল্পটি কেবলমাত্র অর্থনৈতিক দিক থেকেই নিরাপত্তা দেয় না, বরং মানসিক স্বস্তিও এনে দেয়।

স্কিমের আকর্ষণীয় দিক:

  • সকলের জন্য সুযোগ: বয়স, পেশা, আয় – কোনো কিছুই বাধা নয়। সরকারি, বেসরকারি, স্বকর্মী সহ সবাই এই স্কিমে অংশ নিতে পারেন।
  • নমনীয়তা: নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী অবদান দিতে পারেন। কম আয়ের ব্যক্তিদের জন্য সরকারি সহায়তাও আছে।
  • নিশ্চিত লাভ: আপনার অবদানের উপর আকর্ষণীয় লাভ পাবেন, আর সেই লাভের নিশ্চয়তা সরকার দেয়।
  • অবসরেও আয়ের ধারা: ৬০ বছর বয়স হলে প্রতি মাসে পেনশন পাবেন। আর এ আয় চলবে জীবনভর।

স্কিমের সুফল:

  • বৃদ্ধাবস্থায় চিন্তামুক্ত জীবন: অর্থনৈতিক চাপ কমে যাওয়ায় বয়স্করা শান্তিতে জীবন কাটাতে পারবেন।
  • জীবনযাত্রার মানের উন্নতি: আর্থিক স্বচ্ছলতার ফলে চিকিৎসা, খাদ্যাভাস, বিনোদন – সবকিছুতেই উন্নতি আসবে।
  • সামাজিক সুরক্ষা: এই স্কিম সামাজিক সুরক্ষা জালকে আরও মজবুত করবে।
  • জাতীয় অর্থনীতির সুফল: সকলের অবদান জাতীয় সঞ্চয় বাড়াবে, যা অর্থনীতির চাঞ্চল্য কমিয়ে স্থিতিশীলতা আনবে।

চ্যালেঞ্জ রয়েছে, কিন্তু সমাধানও আছে:

  • সচেতনতা বাড়ানো: অনেক নাগরিকই এখনও স্কিমটি সম্পর্কে জানেন না। সরকার ও জনগণের যৌথ প্রচেষ্টায় এর প্রচার বাড়াতে হবে।
  • অবদানে নিয়মিতা: অবদান না দিলে লাভের সুযোগ থাকবে না। এজন্য আকর্ষণীয় পদ্ধতি ও সহজ অর্থ পরিশোধ ব্যবস্থা প্রয়োজন।
  • স্কিমের দীর্ঘস্থায়িত্ব: দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা এবং স্থিতিশীল ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।

উপসংহার:

সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সকল নাগরিককে এই স্কিমে অংশগ্রহণ করে নিজেদের এবং দেশের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে হবে। সরকারের পাশাপাশি জনগণের সচেতনতা ও অংশগ্রহণই এই স্কিমকে সফল করে তুলবে।