ঝুঁকি ও মুনাফার হার কিভাবে সম্পর্কিত?
বিনিয়োগের জগতে ঝুঁকি এবং মুনাফার হার দুটি অপরিহার্য ধারণা। বিনিয়োগকারীদের জন্য এই দুইটির সম্পর্ক বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি তাদের বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সাধারণভাবে, ঝুঁকি এবং মুনাফার হার পরস্পর সাপেক্ষে কাজ করে; অর্থাৎ, উচ্চ ঝুঁকির বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উচ্চ মুনাফার সম্ভাবনা থাকে এবং কম ঝুঁকির বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কম মুনাফার সম্ভাবনা।
ঝুঁকি ও মুনাফার সম্পর্ক:
১. উচ্চ ঝুঁকি, উচ্চ মুনাফা:
উচ্চ ঝুঁকির বিনিয়োগ যেমন স্টক মার্কেট, বিশেষ করে ছোট এবং নতুন কোম্পানির স্টক, বিনিয়োগকারীদের উচ্চ মুনাফার সম্ভাবনা দেয়। উদাহরণস্বরূপ, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE) এ কিছু উচ্চ প্রযুক্তি কোম্পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের উচ্চ রিটার্ন দিয়েছে। তবে, একই সময়ে এই ধরনের স্টকে বড় পতনের ঝুঁকি থাকে, যা বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি করতে পারে।
২. নিম্ন ঝুঁকি, নিম্ন মুনাফা:
কম ঝুঁকির বিনিয়োগ যেমন সরকারি বন্ড বা সঞ্চয়ী ব্যাংক ডিপোজিট, বিনিয়োগকারীদের স্থিতিশীল কিন্তু সীমিত মুনাফা প্রদান করে। বাংলাদেশে ১০ বছরের সরকারি বন্ডের সুদের হার প্রায় ৭-৮% যা তুলনামূলকভাবে নিরাপদ বিনিয়োগ বলে বিবেচিত।
বাংলাদেশের উদাহরণ:
স্টক মার্কেট: ২০২২ সালে DSE-তে কিছু স্টক যেমন গ্রামীণফোন এবং ব্র্যাক ব্যাংক উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছিল। বিনিয়োগকারীরা এই স্টকে বিনিয়োগ করে উচ্চ মুনাফা অর্জন করেছিলেন, কিন্তু একই সময়ে বাজারের অস্থিতিশীলতার কারণে ক্ষতির ঝুঁকিও ছিল।
সরকারি বন্ড: ১০ বছরের সরকারি বন্ডে বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকারীরা নিশ্চিতভাবে নির্দিষ্ট মুনাফা পেতেন, কিন্তু তাদের লাভের হার স্টক মার্কেটের তুলনায় কম ছিল।
উপসংহার:
বিনিয়োগকারীদের জন্য ঝুঁকি এবং মুনাফার সম্পর্ক বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চ ঝুঁকির বিনিয়োগের মাধ্যমে উচ্চ মুনাফার সম্ভাবনা থাকে, কিন্তু সেই সাথে ক্ষতির ঝুঁকিও বেশি থাকে। অপরদিকে, কম ঝুঁকির বিনিয়োগ স্থিতিশীল কিন্তু সীমিত মুনাফা প্রদান করে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিবেশে এই সম্পর্ক স্পষ্টভাবে দেখা যায়, যা বিনিয়োগকারীদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়ক। বিনিয়োগের পূর্বে ঝুঁকি মূল্যায়ন এবং মুনাফার সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করা অত্যন্ত জরুরি, যাতে বিনিয়োগকারীরা তাদের আর্থিক লক্ষ্য পূরণে সক্ষম হন।