বিনিয়োগকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে ঝুঁকি কত প্রকার ও কি কি?
বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকি একটি অবিচ্ছেদ্য উপাদান। বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকির সম্মুখীন হন, যা তাদের বিনিয়োগের ফলাফলে প্রভাব ফেলে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিবেশে এই ঝুঁকিগুলোর প্রভাব বিশেষভাবে স্পষ্ট। নিচে বিনিয়োগকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে প্রধান ঝুঁকির প্রকারভেদ আলোচনা করা হলো:
১. বাজার ঝুঁকি (Market Risk):
মার্কেটের ওঠানামা বিনিয়োগকারীদের প্রধান ঝুঁকি। উদাহরণস্বরূপ, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (DSE) এর সূচকে ২০২২ সালে ১৫% পতন ঘটে, যা অনেক বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগের মূল্য হ্রাসের কারণ হয়।
২. ক্রেডিট ঝুঁকি (Credit Risk):
ক্রেডিট ঝুঁকি ঘটে যখন ঋণগ্রহীতা সময়মত ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়। বাংলাদেশে মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি বিদ্যমান, যদিও ডিফল্ট রেট প্রায় ১-২% সীমিত থাকে।
৩. সুদের হার ঝুঁকি (Interest Rate Risk):
সুদের হারের পরিবর্তন বিনিয়োগের আয় ও ব্যয়ে প্রভাব ফেলে। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশ ব্যাংক সুদের হার বাড়ালে সরকারি বন্ডের মূল্য কমে যায়, যা বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি করতে পারে।
৪. মুদ্রা ঝুঁকি (Currency Risk):
বিদেশি মুদ্রায় বিনিয়োগ করলে মুদ্রার মূল্য পরিবর্তনের ঝুঁকি থাকে। যেমন, USD/BDT বিনিময় হার বাড়লে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের লাভ কমে যেতে পারে।
৫. অপারেশনাল ঝুঁকি (Operational Risk):
প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ ত্রুটি বা দুর্বলতা অপারেশনাল ঝুঁকি সৃষ্টি করে। বাংলাদেশে কিছু স্টক ব্রোকারেজ ফার্মের সিস্টেম ব্যর্থতা বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি করেছে।
৬. রাজনৈতিক ঝুঁকি (Political Risk):
রাজনৈতিক অস্থিরতা বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমাতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক উত্তেজনা বাজারকে অস্থির করে তুলতে পারে।
উপসংহার:
বিনিয়োগকারীদের জন্য ঝুঁকি চিহ্নিত করা এবং তার যথাযথ ব্যবস্থাপনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের উদাহরণগুলো দেখায় যে, বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি বিনিয়োগের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে। সঠিক তথ্য ও কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা এই ঝুঁকিগুলো কমিয়ে আনা সম্ভব, যা তাদের বিনিয়োগকে আরও নিরাপদ ও লাভজনক করে তুলবে।