বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন (সংশোধন) ২০১৫ – বৈদেশিক বিনিয়োগের প্রতি আরও অনুকূল পরিবেশ
বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৪৭ সালে প্রণীত হলেও সময়ের সাথে সাথে বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং বিনিয়োগের পরিবর্তিত ধারার প্রতি লক্ষ রেখে এই আইনের সংশোধনের প্রয়োজন দেখা দেয়। ২০১৫ সালের সংশোধনী বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশের বাজারকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার লক্ষ্যে গৃহীত হয়।
এই সংশোধনীর মাধ্যমে, বিনিয়োগকারী এবং অন্যান্য অংশীদারদের জন্য কিছু অপ্রয়োজনীয় এবং জটিল প্রক্রিয়া সরলীকরণ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, পূর্বে কোম্পানিগুলোকে তাদের বিদেশী কর্মীদের বাংলাদেশে নিয়োগ এবং রেমিট্যান্সের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিতে হতো। কিন্তু ২০১৫ সালের সংশোধনীর মাধ্যমে এই দায়িত্ব সরাসরি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের উপর ন্যস্ত করা হয়, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রক্রিয়াটিকে অনেক সহজ করে তোলে।
এছাড়াও, বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাংলাদেশে শাখা বা যোগাযোগ অফিস স্থাপনের প্রক্রিয়া সহজ করা হয়। পূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমতির প্রয়োজন হলেও, সংশোধিত আইনে বিনিয়োগ বোর্ডের অনুমোদন পাওয়ার পরেই তারা কার্যক্রম শুরু করতে পারে।
২০১৫ সালের সংশোধনীর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো বাংলাদেশী নাগরিক এবং বিদেশীদের সমান অধিকার প্রদান। এখন উভয় পক্ষকেই তাদের বিদেশী সম্পদের বিবরণ বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হয়, যা স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে।
সামগ্রিকভাবে, বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনের ২০১৫ সালের সংশোধনী বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিবেশকে আরও উন্মুক্ত, সহজ এবং আকর্ষণীয় করে তুলেছে। এটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।