কোম্পানি ঝুঁকি কি?
কোম্পানি ঝুঁকি (Company Risk) হলো সেই সম্ভাব্য ঘটনা বা পরিস্থিতি যা কোনো প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম, লাভজনকতা এবং স্থায়িত্বকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এটি অভ্যন্তরীণ এবং বহিঃস্থ উভয় কারণে হতে পারে। বাংলাদেশের ব্যবসায়িক পরিবেশে বিভিন্ন ধরনের কোম্পানি ঝুঁকি বিদ্যমান, যা সচেতনতা ও সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মোকাবেলা করা জরুরি।
কোম্পানি ঝুঁকের উদাহরণ:
১. অর্থনৈতিক পরিবর্তন: – উদাহরণ: বাংলাদেশে ২০২৩ সালে মুদ্রাস্ফীতি হার ৬.৮% ছিল, যা উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে। এর ফলে অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের মুনাফা হ্রাস পেয়েছে এবং কিছু ব্যবসা সংকটগ্রস্ত হয়েছে।
- প্রতিযোগিতা:
- উদাহরণ: মোবাইল বাজারে নতুন ব্র্যান্ডের আগমন গ্রামীণফোনের বাজার শেয়ার কমাতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, নতুন ব্র্যান্ডের সস্তা এবং আধুনিক ফিচারসমূহ গ্রাহকদের আকর্ষণ করেছে, যা গ্রামীণফোনের বিক্রয় ও মুনাফাকে প্রভাবিত করেছে।
- প্রযুক্তিগত সমস্যা:
- উদাহরণ: ২০২২ সালে কিছু বাংলাদেশি ব্যাংক সাইবার আক্রমণের শিকার হয়েছিল, যার ফলে গ্রাহকদের তথ্য লিক হয় এবং প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটি গ্রাহকদের আস্থা কমিয়ে দেয় এবং ব্যবসায়িক ক্ষতি ঘটে।
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ:
- উদাহরণ: ২০২৩ সালে সাইক্লোন ‘মোরান’ অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানকে প্রভাবিত করেছে, যা তাদের উৎপাদন ক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে এবং আর্থিক ক্ষতি করেছে। এর ফলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনরুদ্ধারের জন্য অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হয়েছে।
মোকাবেলার উপায়:
কোম্পানিগুলোকে ঝুঁকি পরিচালনার জন্য বিভিন্ন কৌশল গ্রহণ করতে হবে:
- সঠিক পরিকল্পনা: ঝুঁকি চিহ্নিত করে তার বিরুদ্ধে পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়া।
- বীমা গ্রহণ: সম্ভাব্য ক্ষতির বিরুদ্ধে বীমা করানো।
- বাজার বিশ্লেষণ: বাজারের পরিবর্তন মনিটর করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া।
- টেকনোলজির ব্যবহার: সাইবার নিরাপত্তা ও অন্যান্য প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
উপসংহার:
কোম্পানি ঝুঁকি চিহ্নিত ও সঠিকভাবে মোকাবেলা করা বাংলাদেশের ব্যবসায়িক পরিবেশে সফলতার চাবিকাঠি। সচেতনতা ও উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব, যা তাদের স্থায়িত্ব এবং বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।